প্রকাশিত: ২১/০৬/২০১৮ ৩:০৭ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১:৪১ এএম

ডেস্ক রিপোর্ট ::

রাখাইন রাজ্যে গত বছর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টে (আইসিসি) মামলা দায়েরে সহায়তা করার জন্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়ের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছে দেশটির ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কমিশন। যৌন সহিংসতার শিকার ৫৩ জন কথিত ভুক্তভোগীকে চিহ্নিতও করেছে তারা।

১০ জুন দুই মন্ত্রণালয়কে আলাদাভাবে দেয়া চিঠিতে কমিশনের চেয়ারম্যান কাজি রিয়াজুল হক বলেছেন, মানবাধিকার কমিশন দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে স্থায়ী সমাধানে পৌঁছার জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে চলমান দ্বিপাক্ষিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি আইসিসির দ্বারস্থ হওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

চিঠিতে বলা হয়, সঙ্কট সমাধানে সরকারের পদক্ষেপের বাইরে আলাদাভাবে তদন্ত করেছে কমিশন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, “আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের দ্বারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গবেষকদের একটি দল গোপনে ৫৩ জন নারীর স্বীকারোক্তি রেকর্ড করেছে যারা মিয়ানমারে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে”। চিঠিতে আরও বলা হয়, আইসিসিতে যখন মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম শুরু হবে, তখন প্রয়োজনে তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করবে কমিশন।

গত বছর রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ষাঁড়াশি অভিযান থেকে প্রাণ বাঁচাতে সাত লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এ অভিযানকালে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ এবং হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছে। জাতিসংঘ এই ঘটনাকে জাতিগত নির্মূল অভিযানের আদর্শ উদাহরণ হিসেবে বর্ণনা করেছে। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে এই অপরাধে বিচার করা যাবে কি না, সে বিষয়ে সম্প্রতি আইসিসি বাংলাদেশের মতামত জানতে চেয়েছে। এর পরই মানবাধিকার কমিশন দুই মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিলো।

তবে বাংলাদেশ আইসিসিকে স্বীকৃতি দিলেও মিয়ানমার এখনও তাদেরকে স্বীকৃতি দেয়নি।

ঢাকা-ভিত্তিক দৈনিক নিউ এজ পত্রিকা এক রিপোর্টে উল্লেখ করে যে, বাংলাদেশ ১১ জুন আইসিসিকে তাদের মতামত জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক সীমান্ত পথে জোর করে শরণার্থীদের ঠেলে দেয়ার অপরাধে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে তদন্ত ও বিচারিক ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না, সে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে বাংলাদেশের অভিমত। রিপোর্টে বলা হয়েছে, দোষিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার পক্ষে বাংলাদেশ জোরালো মত দিয়েছে।

কূটনৈতিক সূত্রে নিউ এজ জানতে পেরেছে, ১৩ জুন আদালত এ বিষয়ে রুদ্ধদ্বার  শুনানি করবে। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণে আইসিসির আইনি ক্ষমতা কতটুকু রয়েছে এবং সে প্রেক্ষিতে প্রাথমিক পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শুনানিতে অনুমতি চাইবেন আইসিসি প্রসিকিউটর ফাতাউ বেনসাউদা।

নিউ এজ জানিয়েছে, ৪ জুন ঢাকায় এক সেমিনারে আইসিসির সাবেক প্রসিকিউটর কেইট বিগ্নেসরণ জোর দিয়ে বলেন রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবাতাবিরোধী অপরাধের তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ ও রেকর্ডিংয়ের সময় এবং রাখাইন রাজ্যে অপরাধে জড়িতদের চিহ্নিত করার সময় অবশ্যই আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে হবে।

৪ জুনে এক রিপোর্টে ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স বলেছে, তারা ৩৭৭ জন নারীর চিকিৎসা করেছে যারা ২৭ আগস্ট থেকে ৩০ এপ্রিলের মধ্যবর্তী সময়কালে যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছে। এদের বয়স ৯ থেকে শুরু করে ৫০ বছর পর্যন্ত। তবে সংগঠনটি বলেছে সহিংসতার শিকার নারীর প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি।সুত্র: সাউথ এশিয়ান মনিটর

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির আশা বাংলাদেশ-গাম্বিয়ার

রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে করা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ ও গাম্বিয়া। ...

কারামুক্ত হলেন মামুনুল হক

হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক কারামুক্ত হয়েছেন। শুক্রবার (৩ মে) সকাল ...

সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উখিয়ায় হবে উন্মুক্ত কারাগার, শিগগির নির্মাণ শুরু

উন্নত দেশের ন্যায় বাংলাদেশে উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ...